ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের মেয়াদ ৪ বছর (৮ সেমিস্টার) বিশিষ্ট কোর্স। প্রতি সেমিস্টারের মেয়াদ ৬ মাস। প্রতি সেমিস্টারে একটি পর্ব মধ্য/মিডটার্ম পরীক্ষা এবং একটি পর্ব সমাপনী/ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তারপর আবার নতুন সেমিস্টার শুরু হয়। অর্থাৎ প্রতি ৬ মাস পর পর সেমিস্টার পরিবর্তন হয়। তাহলে প্রতি বছরে ২টি করে পর্ব মধ্য পরীক্ষা ও ২টি করে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
পর্ব মধ্য পরীক্ষার রেজাল্ট, জব, এসাইনমেন্ট,ভাইবা এবং ক্লাসের উপস্থিতি খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর উপর নির্ভর করেই স্যারেরা পর্ব সমাপনী/ফাইনাল পরীক্ষার প্র্যাক্টিক্যাল মার্ক প্রদান করে থাকেন। তাই আবারো বলছি উপস্থিতি খুব গুরুত্বপূর্ণ উপস্থিতির উপর আলাদা করে মার্ক কাউন্ট করা হয়।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ১ম, ২য়, ৩য় পর্বের ফাইনাল পরীক্ষা বোর্ডের নির্দেশ অনুযায়ী নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে হয়ে থাকে এবং রেজাল্টও প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রকাশিত হয় । ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ, ৭ম এর ফাইনাল পরীক্ষা বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত হয়ে থাকে এবং রেজাল্টও বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত হয়। আর ৮ম সেমিস্টারের শুধু মাত্র প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ ১ম-৩য় সেমিস্টার পর্যন্ত আপনাদের পরীক্ষার খাতা কলেজেই থাকবে আর ৪র্থ-৭ম এ আপনাদের পরীক্ষার খাতাপত্র সব বোর্ডের তত্ত্বাবধানে থাকবে।।(এস এস সি পরীক্ষার মত)।
যেহেতু ১ম-৩য় সেমিস্টার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে হয়ে থাকে তাই ১ম-৩য় সেমিষ্টারেই প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর উচিত সর্ব্বোচ্চ মার্কস উঠানোর একটি সুযোগ থাকে যা পরর্তীতে জিপিএ বাড়ানোর ক্ষেত্রে অনেক সহযোগিতা করে।
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এ গ্রেডিং নির্ধারণ করা হয় ৪.০০ স্কেলে যা মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিকের তুলনায় ভিন্ন। আর প্রতি সেমিস্টারের রেজাল্ট CGPA (Cumulative Grade Point Average) আকারে প্রদান করা হয়। আপনি প্রথম থেকে অষ্টম সেমিস্টার পর্যন্ত যে CGPA অর্জন করবেন তার একটা পারসেন্টেজ বের করে ফাইনাল CGPA নির্ধারণ করা হবে। তাই প্রতি সেমিস্টারের CGPA আপনার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি সেমিস্টারের CGPA কত পারসেন্ট যোগ হয় তার একটা হিসাব নিচে দেয়া হল। যেমনঃ-
১ম পর্ব-৫%
২য় পর্ব-৫%
৩য় পর্ব-৫%
৪র্থ পর্ব-১০%
৫ম পর্ব -১৫%
৬ষ্ঠ পর্ব-২০%
৭ম পর্ব -২৫%
৮ম পর্ব-১৫%
ইয়ার লস ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটি অভিশপ্ত দিক পারতপক্ষে সবার উচিৎ এই ইয়ার লস এড়িয়ে চলা তাই ইয়ার লস সম্পর্কে একটু ভালো করে জানা উচিৎ। ১ম-৩য় সেমিস্টার পর্যন্ত দুইয়ের অধিক বিষয়ে ফেইল করলে ইয়ার ড্রপ বা ইয়ার লস হবে। এক বা দুই বিষয়ে ফেইল করলে নতুন সেমিস্টারে ক্লাস করতে পারবে তবে নতুন সেমিস্টারে থাকা অবস্থায় আগের ফেইল করা বিষয়গুলোর পুনরায় পরীক্ষা (পরিপূরক পরীক্ষা) নেওয়া হবে। পরিপূরক পরীক্ষায় যদি আবারও ফেইল করে তাহলেও ইয়ার লস বা ড্রপ হিসাবে গণ্য হবে।
৪র্থ -৭ম সেমিস্টার (বোর্ড পরীক্ষায়) যদি তিনের অধিক বা চার বিষয়ে ফেইল করে তাহলে ইয়ার লস বলে গণ্য হবে। এক থেকে তিন বিষয় পর্যন্ত ফেইল করলে পরবর্তী সেমিস্টারে রেফার্ড দেয়ার সুযোগ থাকে।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং GPA Calculation:-
Range of Mark(Percentage) | Grade | Point |
80 or Above | A+ | 4.00 |
75-below 80 | A | 3.75 |
70-below 75 | A- | 3.50 |
65-below 70 | B+ | 3.25 |
60-below 65 | B | 3.00 |
55-below 60 | B- | 2.75 |
50-below 55 | C+ | 2.50 |
45-below 50 | C | 2.25 |
40-below 45 | D | 2.00 |
Below 40 | F | 0.00 |
GPA Calculation 4.00 Scale
১ম সেমিস্টার থেকেই চেষ্টা করবেন জিপিএ যেন পারতপক্ষে (৩.০০) এর নিচে না যায়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে জব সেক্টরে ৩.০০ এর নিচে জিপিএ থাকলে জব প্লেসমেন্টে একটু অসুবিধা হয়। আর প্রথম তিন সেমিস্টারে জিপিএ কম আসলে ভবিষ্যতে গ্রেড পয়েন্টে অনেক পিছিয়ে পরতে হবে।
প্রতি বছর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এ অনেক অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হয় তার মধ্যে অনেকে ৪ বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে না। অনেকে আবার ইয়ার লসের কবলে পরে ঘুরতে থাকে আর অনেকে চাপের অযুহাত দেখিয়ে কেটে পরে। নিয়মিত ক্লাস করতে হবে এইটাই একজন শিক্ষার্থীর মূল অধ্যবসায় হওয়া উচিৎ। আপনি যদি নিয়মিত ক্লাসগুলো করেন স্যারদের লেকচারের অন্তত ৩০-৪০% গেইন করতে পারেন তাহলে আপনার জন্য এই ৪ বছরে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে বের হওয়া কোন ব্যাপার না। পরিশেষে পোস্টটি পড়ে যদি আপনাদের কোন উপকার হয় তাহলে সার্থক বলে মনে করবো।। কোন কিছু না বুঝে থাকলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব।।
Facebook Comments